ক্রিকেট
মহেন্দ্র সিং ধোনি নিয়ে খোলামেলা বিরাট, জানতে পড়ুন
রে স্পোর্টজ নিউজ ডেস্ক: মাঠের বাকবিতণ্ডা থেকে ড্রেসিংরুম শেয়ার, অনেকটা পথ একসাথে হেঁটে ফেলেছেন ভারতের দুই কিংবদন্তি ক্রিকেটার গৌতম গম্ভীর এবং বিরাট কোহলি। একাধিকবার মাঠে দুজনের মধ্যে বচসার সাক্ষী থেকেছে ক্রিকেট দুনিয়া। সেই গৌতম গম্ভীরই এখন জাতীয় দলের কোচ। তবে অতীতকে পিছনে ফেলে কোহলি এবং গম্ভীর দুজনেই সামনের লক্ষ্যে স্থির, একথা স্পষ্টই বোঝা গেল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রকাশ করা একটি ভিডিওতে। সেখানে মুখোমুখি আড্ডা জমালেন বিরাট কোহলি এবং গৌতম গম্ভীর। উঠে এলো অজানা নানা তথ্য।
২০১৪-১৫ সালের অস্ট্রেলিয়া সিরিজের কথা উঠতেই যে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিলেন বিরাট, সে কথা জানালেন তিনি। মহেন্দ্র সিং ধোনি তখন অবসর ঘোষণা করেছেন টেস্ট ক্রিকেট থেকে। স্বাভাবিকভাবেই দলের দায়িত্ব গিয়ে পড়ে বিরাট কোহলির উপর। সেই প্রসঙ্গে বিরাট বলেন, “আমার কাছে সবথেকে চ্যালেঞ্জিং মুহূর্ত ছিল এটাই। তোমরা তখন নতুনদের জন্য জায়গা করে দিয়েছ, অন্যদিকে মাহি ভাই টেস্ট অধিনায়কত্ব থেকে অবসর নিল। আমরা তখনো ট্রানজিশন পিরিয়ড কাটিয়ে উঠতে পারিনি। আমার বয়স তখন ২৫, আর তাই আরো কয়েকজন ২৪ ২৫ বছরের ছেলেকে নিয়ে কী করে এত বড় দায়িত্ব পালন করব আমার মাথাতেই আসছিল না। তারপর মনে হল ঠান্ডা মাথায় বসে কোন পরিকল্পনা করা উচিত। হুটহাট এই ধরনের কাজ করা চলে না। তখন ঠিক করি একটু দূরের কথা ভাবব। আগামী ৭ বছরে আমি দলকে কোথায় নিয়ে যেতে চাই সেটা ভাবতে গিয়েই সমাধান পেয়ে গেলাম। আমাদের প্রয়োজন ছিল বেশ কয়েকজন ফাস্ট বোলার। তার সাথে এমন ব্যাটার যারা দীর্ঘক্ষণ ক্রিজে টিকে থাকতে পারে। পাঁচজন ব্যাটার এবং একজন উইকেট রক্ষক মিলিয়ে মোট ৩৫০ থেকে ৪০০ টার্গেট সেট করেছিলাম। সাত নম্বরটা আমাদের অপশনই ছিল না। আর এই চ্যালেঞ্জটাই আমার জেদকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছিল নিজেকে প্রমাণ করার জন্য ” বলেন বিরাট। জবাবে গম্ভীর জানান, “আমি অনুমান করতে পারি তোমার উপর দিয়ে কতটা চাপ গেছে। মাত্র ২৫ বছর বয়সে তুমি যা করে দেখিয়েছ তা অসাধারণ। তোমাদের বোলিং ইউনিট খুব শক্তিশালী ছিল। এটা মাথায় রাখতেই হবে টেস্ট ক্রিকেট ২০ টা উইকেট নিলে তবে জেতা যায়। সেক্ষেত্রে বোলিংটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর সেই কারণেই দেশের অন্যতম সফল টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে তোমাকে মনে রাখবে ভারত। তবে এরপরেও তোমার ক্রেডিট প্রাপ্য নিজের ব্যাটিং স্কিল এর পাশাপাশি নিজের দৃঢ় মনোভাবের জন্য। অ্যাডিলেডে আমার সেই ইনিংসটার কথা মনে আছে। ৪০০ রানের টার্গেট ছিল আমাদের সামনে আর তুমি সেই ম্যাচটাও জিততে চেয়েছিলে। এই হার না মানা মানসিকতাটা খুব জরুরী। তুমি অধিনায়ক থাকাকালীন দলের মধ্যে যে জেদ, যে অ্যাগ্রেশন, যে স্পিরিট নিয়ে এসেছিলে সেটাই আজকের দিনেও আমাদের প্রয়োজন।”
মাঠে লড়াই মাঠে ভুলে দুই ক্রিকেটারই যে এখন হাত মিলিয়েছেন তা বলাই বাহুল্য। গৌতম গম্ভীর এবং বিরাট কোহলি দুজনের এই মেলবন্ধন যে নিঃসন্দেহে ভারতীয় ক্রিকেটে যুগান্তকারী ফলাফল আনতে পারে এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।