ফুটবল

ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে আবারও বাংলায় ফিরতে চান জামশেদপুর দলের বাঙালি ফুটবলার ঋত্বিক দাস। একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি কি বললেন? জানতে পড়ুন…

Published

on

রে স্পোর্টজের প্রতিবেদন: সুপার কাপের চতুর্থ কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে, কঠিন প্রতিপক্ষ নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসিকে টাইব্রেকারে ৫-৪ ব্যবধানে পরাজিত করে, প্রতিযোগিতার সেমিফাইনালে পৌঁছেছে খালিদ জামিলের দল জামশেদপুর এফসি। 

রে স্পোর্টজ: গত ম্যাচে আপনারা টাইব্রেকারে ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালে প্রবেশ করেছেন। সেমিফাইনালে প্রতিপক্ষ মুম্বই সিটি এফসি। সেই ম্যাচটাকে আপনারা কিভাবে দেখছেন?

ঋত্বিক: এটা আমাদের দ্বিতীয় সেমিফাইনাল এই মরশুমের। এর আগে আমরা আইএসএল সেমিফাইনালে মোহনবাগানের কাছে হেরেছি। ফলে সকলের মধ্যেই একটা জেতার খিদে রয়েছে। তাই মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে সবাই জেতার মানসিকতা নিয়েই মাঠে নামবে এবং নিজেদের একশো শতাংশ দেওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকবে।

রে স্পোর্টজ: গোটা মরশুম জামশেদপুর দল যথেষ্ট ভাল পারফরম্যান্স করেছে। আইএসএল সেমিফাইনালে ঘরের মাঠে ম্যাচ জিতলেও মোহনবাগানের কাছে হারতে হয়েছিল। এই জার্নিটা নিয়ে আপনি কি বলবেন?

ঋত্বিক: এই জার্নিতে অনেক চড়াই উৎরাই ছিল। কখনও আমরা জিতছিলাম আবার কখনও হারছিলাম। সব থেকে ভাল যে বিষয়টা ছিল, আমাদের দলের প্রত্যেকের মধ্যে একতা ছিল। যেটা আমাদেরকে পরবর্তী ম্যাচগুলির জন্য অনেকটাই সাহায্য দিয়েছে। এছাড়াও যখন আমরা প্লেঅফে উঠলাম, নর্থইস্টকে প্লেঅফের ম্যাচে হারিয়ে 

রে স্পোর্টজ: সুপার কাপ জিতলে এএফসিতে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ রয়েছে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে কতটা ইচ্ছুক?

ঋত্বিক: আমরা এর আগে যখন শিল্ড জিতেছিলাম, সেই বছর এএফসিতে খেলার সুযোগ হাতছাড়া করেছিলাম। আমার সেই বছর জামশেদপুরে প্রথম ছিল। মুম্বইয়ের সঙ্গে আমাদের পরবর্তীতে কোয়ালিফাইং রাউন্ডের ম্যাচ খেলতে হয়েছিল সেখানে আমরা ম্যাচ হেরেছিলাম। সেটা আমাদের কাছে একটা বিরাট বড় সুযোগ ছিল নেইমারদের দলের বিরুদ্ধে খেলার। সেই ঘাটা আমাদের এখনও মেটেনি। তাই এবারে নিজেদের ১১০ শতাংশ দিয়ে এই প্রতিযোগিতায় জিতে এএফসিতে প্রতিনিধিত্ব করতে। 

রে স্পোর্টজ: দলে সিভেরিওর মত ফুটবলার রয়েছেন যিনি গতবছর ইস্টবেঙ্গলের হয়ে এই সুপার কাপ জিতেছিলেন। তার থেকে কোনরকম বার্তা পাওয়া যায়?

ঋত্বিক: সিভেরিও একজন প্রফেশনাল ফুটবলার। মাঠে কিংবা মাঠের বাইরেও। একজন ফুটবলার এবং মানুষ হিসেবে সে আমাদের সঙ্গে খুব ভালোভাবে মিশে থাকেন। কেউ যদি তাকে কিছু শেখায় সেটা সে খুব ভালকরে সেখেও। আমাদের দলের মধ্যে সেই একতাটা রয়েছে। সুপার কাপেও সিভেরিও যথেষ্ট ভাল খেলছে আর সেইটা আমাদের দলকে অনেক সাহায্য করছে। 

রে স্পোর্টজ: একজন ভারতীয় কোচ হিসেবে ভারতীয় ফুটবলে অনেক সাফল্য এনে দিয়েছেন খালিদ জামিল। তার ব্যাপারে কি বলবেন?

ঋত্বিক: উনি সারাদিন যেরকমভাবে ফুটবল নিয়ে কাজ করেন, আমি এরকমভাবে ফুটবল নিয়ে কাজ করতে কাউকে দেখিনি। প্রতিপক্ষকে এত ভালোভাবে মেপে নেওয়া আর দিন রাত ফুটবল নিয়ে পড়ে থাকা। সত্যি কথা বলতে ওনার কাছে ফুটবলটাই সবকিছু। আমার এটা প্রথম বছর খালিদ স্যারের কাছে। বেশিরভাগ সময়টা আমি রিহ্যাবে কাটিয়েছি। তবুও আমি যতটা দেখেছি উনি সবার মধ্যে একটা একতা বজায় রাখেন। 

রে স্পোর্টজ: একজন বাঙালি হিসেবে কখনও বাংলায় ফেরার সুযোগ পেলে আবারও ফিরে আসার ইচ্ছা আছে?

ঋত্বিক: নিশ্চই। আমি বাঙালি ছেলে, বাংলায় খেলার সুযোগ পেলে অবশ্যই ফিরতে চাই।

রে স্পোর্টজ: মোহনবাগান চলতি মরশুম আইএসএলে শিল্ড এবং কাপ দুটোই জিতেছে এবং তারপর সুপার কাপে তারা মূলত তাদের রিজার্ভ টিমটাকে পাঠিয়েছে এই প্রতিযোগিতায় খেলার জন্য। কিন্তু প্রথম ম্যাচে কেরালার বিরুদ্ধে সেই জুনিয়র ফুটবলাররা দারুন ফুটবল খেলেছে। এই যে জুনিয়ার ফুটবলাররা এত বড় একটা মঞ্চে সুযোগ পাচ্ছে এই বিষয়টা নিয়ে আপনি কি বলবেন?

ঋত্বিক: আমারতো কখনোই মনে হলোনা যে তারা জুনিয়র দল নিয়ে খেলতে নেমেছে, যেমনভাবে তারা গত ম্যাচে কেরালার বিরুদ্ধে খেলল। বিশেষত সাহাল এবং আশিক যেই ফুটবলটা খেলেছে সেই ফুটবলটা বিদেশে দেখা যায় এবং তাদের মতো ফুটবলারদের জন্যই ফুটবলকে ভালবাসা যায়। 

রে স্পোর্টজ: সমর্থকদের জন্য কি বলবেন?

ঋত্বিক: আমরা ঘরের মাঠে যেই সেমিফাইনাল ম্যাচটা খেলেছিলাম মোহনবাগানের বিরুদ্ধে, সেখানে আমাদের সমর্থকরা প্রথমবারের জন্য জামসেদপুর দলকে ঘরের মাঠে সেমিফাইনাল খেলতে দেখল। সেই ম্যাচে দর্শকরা যে পরিবেশটা তৈরি করেছিল সেটা সত্যিই দেখার মত। সেই ম্যাচে আমরা মোহনবাগানের বিরুদ্ধে জিতেওছিলাম। তাই গোটা মরশুমটা তাদের অনেক বড় অবদান রয়েছে। সুপার কাপেও তারা আমাদেরকে যেরকমভাবে সমর্থন করছেন, যেমন সমাজেরমাধ্যমেও আমরা দেখি সেটা সত্যিই খুব ভাল লাগছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Trending

Exit mobile version