ইস্টবেঙ্গল
DURAND CUP 2025: মোহনবাগানকে “নকআউট” করে, ডুরান্ডের সেমিফাইনালে ইস্টবেঙ্গল। বিস্তারিত পড়ুন…
রে স্পোর্টজ ওয়েব ডেস্ক: সময় একদিন সকলকে সবকিছু ফিরিয়ে দেয়। এই প্রবাদে বিশ্বাসী ছিলেন অসংখ্য লাল-হলুদ সমর্থকেরা। ২০২৩ সালে যখন ডুরান্ড কাপের ফাইনালে মোহনবাগানের কাছে হেরে মাঠ ছেড়েছিলেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকেরা, তখন তাদের চোখে মুখেই ছিল হতাশার ছবি। তারপরেও সময় অনেকটা পেরিয়েছে। কিন্তু লড়াইয়ের মানসিকতা থেকে এক পাও পেছায়নি ইস্টবেঙ্গল। সেইমতই এদিনের সেই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগানকে ডুরান্ড কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে হারিয়ে, সেমিফাইনালে নিজেদের জায়গা পাকা করেছে ইস্টবেঙ্গল। পাশাপাশি হেড কোচ হিসেবে ইস্টবেঙ্গলের দায়িত্ব নেওয়ার পর, প্রথমবারের জন্য ডার্বি জয়ের স্বাদ পেলেন স্প্যানিশ হেড স্যার অস্কার ব্রুজোও। রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় ইস্টবেঙ্গলের হয়ে জোড়া গোল করেছেন লাল-হলুদের গ্রীক ফরোয়ার্ড দিমিত্রিওস দিমানতাকোস। অপরদিকে মোহনবাগানের হয়ে একমাত্র গোলটি করেছেন অনিরুদ্ধ থাপা।
ম্যাচের শুরুতে আক্রমণাত্মক ছন্দে ফুটবল খেলতে শুরু করে ইস্টবেঙ্গল। তবে ম্যাচের ঠিক ১০ মিনিটে অতিক্রান্ত হওয়ার পর, আক্রমনে উঠতে থাকে মোহনবাগানের ফুটবলাররাও। ম্যাচের ১৫ মিনিটে, ফ্রিকিক থেকে গোল করার সুযোগ হাতছাড়া করেন
পরের মিনিটেই চোটের কারণে মাঠ ছেড়ে উঠে যেতে হয়, নবনিযুক্ত মরোক্কান ফরোয়ার্ড হামিদ আহদাদকে। তার জায়গায় মাঠে লাল হলুদের কোচ অস্কার ব্রুজো মাঠে নিয়ে আসেন দিমানতাকোসকে। অপরদিকে আক্রমনে উঠে আসতে থাকেন লাল-হলুদের ফুটবলাররাও। ২৬ মিনিটে ইস্টবেঙ্গল ফুটবলার দিমানতাকোসকে বক্সের বাইরে ফাউল করে বসেন বাগান ফুটবলার টম অলড্রেড। তবে বক্সের বাইরে থেকে সেই ফ্রিকিক থেকে গোল তুলে নিতে ব্যর্থ হন ইস্টবেঙ্গলের মিগুয়েল ফিগুয়েরা। ম্যাচের ৩৩ মিনিটে দিমানতাকোসের একটি গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হয়। ম্যাচের ৩৬ মিনিটে বক্সের ভেতরে বিপিন সিংকে ফাউল করে বসেন টম অলড্রেড। ফলে পেনাল্টি পায় ইস্টবেঙ্গল। সেখান থেকে ম্যাচের ৩৮ মিনিটে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন গ্রীক ফরোয়ার্ড দিমিত্রিওস দিমানতাকোস। ৪৩ মিনিটে হলুদ কার্ড দেখেন সউল ক্রেসপো। ম্যাচের সংযুক্তি সময়ে এসেও, আক্রমণ বজায় রাখেন ইস্টবেঙ্গল ফুটবলাররা। শেষের দিকে একটি গোলমুখী শট নিয়েছিলেন বাগান ফুটবলার আপুইয়া। তবে অল্পের জন্য সেই শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ফলে প্রথমার্ধে ০-১ গোলে এগিয়ে থাকে ইস্টবেঙ্গল।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে দলে একটি পরিবর্তন আনে মোহনবাগান। পাসাং দর্জি তামাঙ্গের জায়গায় বাগান কোচ জোসে মোলিনা মাঠে নিয়ে আসেন জেসন কামিন্সকে। ফলে জেমি-কামিন্স জুটিকে একসঙ্গে রেখে আক্রমণ শুরু করে মোহনবাগান। এদিকে ম্যাচের ৫২ মিনিটে নিজের পাশাপাশি দলের দ্বিতীয় গোলটি করে যান সেই দিমিত্রিওস দিমানতাকোস। দ্বিতীয় গোলটি হজম করার পর, আরও আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে শুরু করেন বাগান ফুটবলাররা। ফ্রিকিক থেকে ভেসে আসা একটি বল থেকে গোললাইন সেভও করেন ইস্টবেঙ্গল রক্ষণভাগের ফুটবলাররা। অপরদিকে মাঝে মধ্যে আক্রমনে উঠতে থাকে ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলাররাও। ম্যাচের ৬৭ মিনিটে ফ্রিকিক পায় মোহনবাগান। তবে লিস্টন কোলাসোর সেই শট, পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। পরের মিনিটেই গোল করে ব্যবধান কমান অনিরুদ্ধ থাপা। ম্যাচের ৭০ মিনিটে তিন তিনটি পরিবর্তন করেন বাগান কোচ জোসে মোলিনা। দিমিত্রি পেত্রাতোস, দীপক টাঙ্গরি এবং দ্বীপেন্দু বিশ্বাসকে মাঠে নামান তিনি। আক্রমনে আরও ঝাঁজ বাড়তে থাকে বাগান দলের। অপরদিকে জল পানের বিরতির পর তিনটি পরিবর্তন আনেন ইস্টবেঙ্গল হেড কোচ অস্কার ব্রুজোও। সৌভিক চক্রবর্তী, পিভি বিষ্ণু এবং ডেভিডকে মাঠে নিয়ে আসেন তিনি। ম্যাচের ৮২ মিনিটে ফ্রিকিক পায় ইস্টবেঙ্গল। তবে গোল তুলতে ব্যর্থ হন তারা। শেষের দিকে কর্নার পায় ইস্টবেঙ্গল। তবে ব্যবধান আর বাড়েনি। অবশেষে ২-১ গোলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগানকে হারিয়ে, ডুরান্ড কাপের সেমিফাইনালের টিকিট পাকা করলো ইস্টবেঙ্গল।