আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিকেই কী ঘুরে দাঁড়ানোর মঞ্চ হিসেবে বেছে নেবেন রোহিত শর্মা? জানতে পড়ুন…
রে স্পোর্টজ ওয়েব ডেস্ক: একসময় “মুম্বইয়ের ক্রিকেটার হওয়ায় ভারতীয় দলে টানা খেলার সুযোগ পাচ্ছেন” এমনটাও কটাক্ষ ভেসে এসেছিল রোহিত শর্মার জন্য। এমনও অনেকে বলতেন যে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির স্নেহধন্য হওয়ার জন্য ভারতীয় দলে নিয়মিত খেলছেন তিনি। এমনকি পরিসংখ্যানগত দিক থেকেও অনেকটাই পিছিয়ে ছিলেন রোহিত। ২০০৭ সালে ভারতীয় দলে অভিষেকের পর ২০১৩ সাল পর্যন্ত ভারতের হয়ে ৮৬টি এক দিনের ম্যাচ খেলে ১৯৭৮ রান করেছিলেন তিনি। গড় ছিল ৩০.৪৩ যেটা এত ম্যাচ খেলা একজন ক্রিকেটারের জন্য খুব ভাল নয়। তবে ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সমস্ত সমালোচনার জবাব দিয়ে নতুনভাবে জন্ম নিয়েছিলেন রোহিত শর্মা।
বলতে গেলে ধোনির একটি সিদ্ধান্তেই বদলেছে রোহিতের ক্যারিয়ার। ছয় নম্বর থেকে সোজা ওপেনিং করার দায়িত্ব দেওয়া হয় তাকে। মহেন্দ্র সিংহ ধোনির এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে ২০১৭ সালে একটি সাক্ষাৎকারে রোহিত বলেন, “ধোনি আমার কাছে এসে বললেন, ‘তুমি ওপেন করবে। তুমি কাট ও পুল ভাল খেল। ওপেনার হিসাবে তুমি সফল হবে।’ ধোনির এই একটা সিদ্ধান্ত আমার কেরিয়ার বদলে দিয়েছিল। ব্যাটার হিসাবে আমি আরও উন্নতি করেছিলাম”। ২০১৩ সালের সেই চ্যাম্পিয়ন ট্রফি পর থেকে ১২ বছরে মোট ১৮২টি এক দিনের ম্যাচ খেলে ৯০১০ রান করেছেন রোহিত। ওপেনার হিসেবে করেছেন ৩০টি সেঞ্চুরি। এক দিনের ক্রিকেটে দারুণ ব্যাটিংয়ের জেরেই টেস্ট দলের পাশাপাশি ভারতের সব ফরম্যাটে অধিনায়ক হয়েছেন রোহিত।
শুধু তাই নয়, ২০১৮ ক্রিকেট বিশ্বকাপেও রেকর্ড গড়েছিলেন রোহিত। একটি বিশ্বকাপে পাঁচটি শতরান করা প্রথম ব্যাটার হয়েছিলেন তিনি। গোটা প্রতিযোগিতায় করেছিলেন ৬৪৮ রান। তবে গত কয়েক বছরে খেলার ধরন বদলেছেন রোহিত। ২০২৩ সালের বিশ্বকাপেও তা দেখা গিয়েছে। তবে খেলার ধরন বদলালেও রান কমেনি রোহিতের। বিশ্বকাপে শেষ ১১টি ইনিংসে পাওয়ার প্লে-তে ১৩৫ স্ট্রাইক রেটে ৪০১ রান করেছেন রোহিত। কিন্তু গত এক বছরে ছবিটা অনেকটাই বদলেছে। লাল বলের ক্রিকেটের পাশাপাশি সাদা বলের ক্রিকেটেও তাঁর ফর্ম খুব একটা ভাল নয়। যদিও কটকে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে শতরানে তাঁর আত্মবিশ্বাস খানিকটা বেড়েছে। এছাড়াও সমালোচনা হচ্ছে রোহিতের ফিটনেস নিয়ে। অধিনায়কত্ব নিয়েও সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি।
২০০৭ সাল থেকে মোট ১৪টি আইসিসি প্রতিযোগিতায় খেলেছেন রোহিত। এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি তাঁর কাছে ১৫তম আইসিসি প্রতিযোগিতা। তবে প্রশ্ন ভেসে আসছে যে এটাই কি শেষ আইসিসি প্রতিযোগিতা রোহিতের? বিসিসিআই জানিয়েছে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শেষে রোহিতের ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলবে তারা। দলে এখন ওপেনারের কোন অভাব নেই। ফলে যদি এই প্রতিযোগিতায় রোহিত ব্যর্থ হন, তাহলে কেরিয়ার শেষও হয়ে যেতে পারে তাঁর। ভবিষ্যতের অধিনায়কের কথা ভেবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সহ-অধিনায়ক করা হয়েছে শুভমন গিলকে। তবে নিজের পুরনো ছন্দে আবারও ফেরার জন্য দীর্ঘ ১২ বছর পর আবারও সেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিকেই দরকার পড়েছে রোহিতের। যেই চ্যাম্পিয়ন ট্রফি থেকে উত্থান হয়েছিল রোহিত শর্মার, সেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেই কি কেরিয়ারকে আরও এক বার বাঁচাতে পারবেন রোহিত? সেই চাপ নিয়েই বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির অভিযান শুরু করবেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা।