রে স্পোর্টজ ওয়েব ডেস্ক: দীর্ঘ আট বছর পর ক্রিকেট দুনিয়ায় ফিরেছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। আর ইতিমধ্যেই সেই প্রতিযোগিতা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক। সরাসরি আইসিসির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন একাধিক ক্রিকেটাররা। উঠেছে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগও। আর সেই পক্ষপাতিত্ব অন্য কারুর সাথে নয়, উঠেছে ভারতের বিরুদ্ধে। অর্থাৎ তাদের দাবি অনুযায়ী ভারতের সাথে পক্ষপাতিত্ব করছে আইসিসি।
কিন্তু কেন এমন অভিযোগ? চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি অনুষ্ঠিত হচ্ছে পাকিস্তানের করাচিতে। কিন্তু নিরাপত্তাজনিত কারণে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার টিম ইন্ডিয়াকে পাকিস্তানে গিয়ে খেলার অনুমতি দেয়নি। আর তাই হাইব্রিড মডেল অনুসরণ করে ভারতের সবকটি ম্যাচ রাখা হয়েছে নিরপেক্ষ ভেন্যু দুবাইতে। এই ঘটনারই প্রতিবাদ জানিয়েছেন একাধিক প্রাক্তন এবং বর্তমান ক্রিকেটাররা।
সম্প্রতি চোটের কারণে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে মাঠে নামতে পারেন নি প্যাট কামিন্স। সেই কামিন্সের সুরে অভিযোগ স্পষ্ট। বলেছেন, “ভারত এমনিতেই শক্তিশালী দল। সেখানে এত বড় একটা প্রতিযোগিতা ফিরে এসেছে সেটার থেকেও বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে তাদের নির্বাচনকে। নির্দিষ্ট একটি স্থানে খেলার জন্য বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে ভারত।” একই সুর শোনা গেছে ইংল্যান্ডের প্রাক্তন ক্রিকেটার নাসির হোসেন এবং মাইকেল অ্যাথার্টন এর কথাতেও। “নিঃসন্দেহে ভারত শক্তিশালী দল, কিন্তু এটা অস্বীকার করার জায়গা আছে কি যে ভারত শুধুমাত্র দুবাইতে খেলছে? সেক্ষেত্রে একই রকম আবহাওয়া একই রকম পিচ, বড় সুবিধে দিচ্ছে ভারতকে। যেখানে অন্য দলগুলিকে এক শহর থেকে অন্য শহর ছুটে বেড়াতে হচ্ছে এবং প্রত্যেকটি শহরের আবহাওয়ার সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে হচ্ছে সেখানেই ভারত শুধুমাত্র দুবাইতে ম্যাচ খেলার কারণে এই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে না। এমনকি দুবাই বেছে নেওয়ার পেছনে ভারতের অন্যতম বড় কারণ হল তাদের স্পিনার অ্যাডভান্টেজ। পিচের সঙ্গে তারা পরিচিত এবং সেক্ষেত্রে যদি সেমিফাইনাল বা ফাইনাল খেলে ভারত তাহলে আগে থেকেই বেশ কিছুটা বাড়তি সুবিধাও পাবে। তাছাড়া যেখানে লাহোর করাচি বা রাউলপিন্ডির ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা প্রথম একাদশ বেছে নিতে হচ্ছে অন্যান্য দলগুলিকে সেখানে ভারত সেট টিম নিয়ে প্রতিবার খেলতে নামছে। এটা বড় সুবিধে ছাড়া আর কী হতে পারে?” ইংল্যান্ডের আরও এক প্রাক্তন বোলার মুখ খুলেছেন এই প্রসঙ্গে। জোনাথন অ্যাডমিনের সুরে ছিল যথেষ্ট পরিমাণ আগ্রাসন। “ভারতকে বাড়তি সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে তা তো স্পষ্ট। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা খেলতে নামার সময় নিজের পছন্দের মাঠ বা পিঠ বেছে নেওয়া যায় না। কিন্তু ভারত যেহেতু পাকিস্তানে গিয়ে খেলতে রাজি হয়নি, সেক্ষেত্রে দুবাইকে বেছে নেওয়া ছাড়া আর কোন রাস্তা খোলা ছিল না। তবে বিষয়টা অত্যন্ত হাস্যকর এবং লজ্জাজনক। তার থেকেও বড় কথা একটা দেশ এত বছর পর যখন প্রতিযোগিতা আয়োজন করছে তখন তারা অন্য দেশে গিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে খেলবে এটা তাদের কাছে কতটা অপমানজনক? আমি সত্যিই জানি না এরকম ভাবে কতদিন পক্ষপাতিত চলবে। ভারত এবং আইসিসি দুজনের পক্ষেই কিন্তু বিষয়টা অস্বস্তিকর হওয়া উচিত।”
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির টিম ঘোষণা করার পর গৌতম গম্ভীর এবং অজিত আগারকারকে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছিল তাদের স্পিনার নির্বাচন নিয়ে। সেটাও যে একটা চালাকি ছিল এমনটাই মনে করছেন ইংল্যান্ডের অনেক ক্রিকেটারই। পাঁচজন স্পিনার খেলানো নিঃসন্দেহে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভাল ফল এনে দিয়েছে ভারতকে। যেহেতু দুবাইয়ের পিচ সম্পর্কে ভারতের আগেই ধারণা ছিল সেক্ষেত্রে বড় সুবিধেও পেয়েছে ভারত। এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে মুখ খোলেনি আইসিসি। তবে এই অভিযোগের কোন পাল্টা পাওয়া যায় কি না তা সময় বলবে।