রে স্পোর্টজ ওয়েব ডেস্ক: ভারতীয় ফুটবলের যে দিনের পর দিন আরও অন্ধকারের দিকে যাচ্ছে সেই কথা আর আলাদাভাবে বলতে লাগে না। সিনিয়র দলের ফুটবলারদের একের পর এক ব্যর্থতা, ভারতকে অনবরত ফিফা রাঙ্কিংয়ে পিছনের দিকে নিয়েই চলেছে। এর শেষ কোথায় তাও কারোর জানা নেই। এসবের মাঝেও ভারত স্বপ্ন দেখে বিশ্বকাপ খেলার। এটা কি আদৌ সম্ভব? দেশের সর্বোচ্চ লিগ আইএসএল আদৌ আসন্ন মরশুমে হবে কিনা সেই নিয়েও এখনও জল্পনা চলছে। তবে এই মুহূর্তে চলছে কলকাতা লিগ। ভারতবর্ষের ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম জনপ্রিয় লিগ এই সিএফএল। বহু বাঙালি ফুটবলার তথা ভিন রাজ্যের ফুটবলার উঠে এসেছেন এই লিগ থেকে, যারা ভবিষ্যতে দেশের জার্সি গায়েও দাপটের সঙ্গে ফুটবল খেলেছেন। কিন্তু আজ সেই সিএফএলের পরিকাঠামো কোথায় গিয়ে ঠেকেছে! সোমবার কলকাতা লিগের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল মোহনবাগান এবং রেলওয়ে এফসি। সেই ম্যাচে ২-০ গোলে সবুজ-মেরুন ব্রিগেড জয় পেলেও, ম্যাচের প্রথমার্ধেই গুরুতর চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তারক হেমব্রমকে। যন্ত্রণায় রীতিমতো কাতরাতে থাকেন তারক। মাঠে তৎক্ষণাৎ তার চিকিৎসার জন্য এগিয়ে যান মোহনবাগানের চিকিৎসকরা। তারপর দেখা যায়, যখন তাঁর পায়ে ব্যান্ডেজ করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, সেখানে দুটো ছাতা দিয়ে সাপোর্ট দেওয়া রয়েছে। পরে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তারককে। কিন্তু এখানেই প্রশ্ন উঠছে কলকাতা লিগের মতো একটা ঐতিহ্যশালী লিগে, তারক হেমব্রমের মত একজন প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলারের গুরুতর চোটের ক্ষেত্রে ছাতা দিয়ে ব্যান্ডেজ বেঁধে পরিচর্যা? এবারে আইএফএ-র এই চূড়ান্ত অব্যবস্থা এবং তারক হেমব্রমের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে নিজের সমাজমাধ্যমে বার্তা দিয়েছেন বাংলার সিনিয়র ফুটবলার প্রীতম কোটাল। একটা সময় এই কলকাতা লিগে খেলেছেন প্রীতমও। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কলকাতা লিগের এমন হাল দেখে নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন তিনি।
নিজের সমাজমাদ্যমে প্রীতম কোটাল লিখেছেন, আমরা বার বার কিছু ঘটনা ঘটার পর তৎপর হতে শুরু করি কিন্তু ঘটনা ঘটার আগে পর্যন্ত আমরা সকলে নিরুতাপ কেন ! কেন আগে থেকে উপযুক্ত পরিকাঠামো করা হয় না , কেন প্রতিটা ম্যাচে ডাক্তার মাঠে উপস্থিত থাকে না। সেই গুলো নিয়ে কেন খতিয়ে দেখা হয় না। ঠিক তেমনই রেলওয়ের ডাক্তারও টিমের সাথে ছিলো না। কেন সেই গুলো নিয়ে ম্যাচের আগে দেখা হয় না এর উত্তর নেই। একটা ফুটবলারের দায়িত্ব যেমন দলের হয়ে ভালো খেলা ঠিক তেমনই দলেরও খেলোয়ারকে দেখার দায়িত্ব। তাহলে কেন টিম ডাক্তার দলের সাথে ছিলোনা আর কেনোই বা আইএফএর তরফ থেকে ডাক্তার ছিলো না এবং তৎক্ষণাৎ সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতোনও কেউ ছিলেন না আমার জানা নেই। একটা ছেলে চোট পাওয়ার পর প্রায় ২৫-৩০ মিনিট মাঠে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে তাও এতো গাফিলতি , অ্যাম্বুলেন্স আছে সে আবার ব্যারাকপুরের বাইরে যাবে না এতো কিছুর পর আর কবে চোখ খুলবে আপনাদের। মোহনবাগানের টিম ডাক্তার তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নিয়ে ইনজেকশন দিয়ে সাময়িক সুস্থতা করেছে কিন্তু আইএফএর এই বিষয় গুলি খতিয়ে দেখেই ম্যাচ পরিচালনা করা উচিত। আজকের ঘটনা অনেক প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলো আমাদের বাংলার ফুটবলের দৈন্য দশার দিকে।