রে স্পোর্টজ ওয়েব ডেস্ক: আগামী ২৩ জুলাই, ডুরান্ড কাপের প্রথম ম্যাচে খেলতে নামবে ইস্টবেঙ্গল। তার আগে বেশ কয়েকদিন ধরেই অনুশীলন শুরু করে দিয়েছে লাল-হলুদ ব্রিগেড। ডুরান্ড কাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যে মূলত সিনিয়র দল নিয়েই প্রতিযোগিতায় খেলতে নামবে ইস্টবেঙ্গল। যেই কারণে চলতি সপ্তাহের মধ্যেই পাঁচজন বিদেশী ফুটবলারকে কলকাতায় নিয়ে এসেছে লাল-হলুদ টিম ম্যানেজমেন্ট। গত বৃহস্পতিবার, কলকাতায় পা রেখেছিলেন ইস্টবেঙ্গলের পালেস্তিনিও মিডফিল্ডার মহম্মদ রশিদ এবং গ্রীক তারকা ফরোয়ার্ড দিমিত্রিওস দিমানতাকোস। রাতে এসেই পরের দিন অনুশীলনেও নেমে পড়েছিলেন দুজনে। এদিকে পরদিনই অর্থাৎ শুক্রবার রাতে শহরে চলে এসেছিলেন ইস্টবেঙ্গলের হেড কোচ অস্কার ব্রুজো এবং আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার সিবিল্লে। রবিবার মধ্যরাতে শহরে পৌঁছেছেন ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার মিগুয়েল ফিগুয়েরা। এছাড়াও রবিবার সকালেই কলকাতায় চলে এসেছেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার সউল ক্রেসপোও। রবিবার বিকেলে যুবভারতীর অনুশীলন মাঠে, চলতি মরশুম প্রথমবারের জন্য হেড কোচ অস্কার ব্রুজোর তত্ত্বাবধানে প্রস্তুতিতে নামেন লাল-হলুদের ফুটবলাররা।
এছাড়াও এদিনের অনুশীলনে এই মরশুমে প্রথমবারের জন্য পাঁচজন বিদেশী ফুটবলার নিয়ে অনুশীলনে নামে ইস্টবেঙ্গল। শুধু তাই নয়, আজকের এই অনুশীলনে সবথেকে বেশি যেটা চোখে পড়েছে সেটা হলো অনুশীলন দেখতে যুবভারতীতে ভিড় জমানো লাল-হলুদ সমর্থকদের। বিগত বেশ কয়েকটি মরশুম এই ইস্টবেঙ্গল দলের সেরম অর্থে কোনও সাফল্য নেই। আইএসএলেও এখনও পর্যন্ত প্রথম ছয়ে কোনোবার শেষ করতে পারেনি তারা। তবুও নতুন মরশুম নতুন আশা নিয়ে দলের পাশে থাকতে এবং প্রতিটা ফুটবলারকে মরশুমের শুরু থেকেই উৎসাহিত এবং উজ্জীবিত করতে এদিন উপস্থিত হয়েছিলেন জনা ৫০০ ইস্টবেঙ্গল সমর্থক। কখনও রশিদ আবার কখনও বা দিমানতাকোস, সকলকেই সমানভাবে গোটা অনুশীলন জুড়ে উৎসাহিত করে গেছেন সমর্থকেরা। এদিকে রবিবার বিকেলে লাল-হলুদের জার্সি গায়ে প্রথমবারের জন্য মিগুয়েল এবং সিবিল্লের অনুশীলন দেখতে মুখিয়ে ছিল লাল-হলুদ জনতা। তবে সেই ইচ্ছেটা আজ পূরণ হয়নি তাদের। মিগুয়েল, ক্রেসপো এবং সিবিল্লেকে অনুশীলনের শুরুতে কিছুক্ষণ কোচের সঙ্গে কথা বলার পর দেখা যায় সাইডলাইনে দাঁড়িয়ে তিনজনে গল্প করছেন। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই মাঠ ছাড়েন তারা। সকালেই কলকাতায় পৌঁছেছেন মিগুয়েল ও ক্রেসপো। এছাড়াও একদিন আগে শহরে এসেছেন সিবিল্লেও। ফলে চোট এড়ানোর জন্য, শুরুতে কিছুটা বিশ্রাম দিতে চাইছেন কোচ অস্কার তার দলের এই গুরুত্বপূর্ণ তিন ফুটবলারকে।
এছাড়া এদিনের অনুশীলনের শুরুতে গোটা দলকে নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ কথাবার্তা সেরে নিলেন অস্কার। যেখানে ভারতীয় এবং বিদেশি বেশ কিছু যেমন নতুন মুখ রয়েছেন ঠিক তেমনই পুরোনো ফুটবলারও রয়েছেন অনেকেই। সকলের সঙ্গেই বার্তালাপ সেরে শুরুতে শারীরিক অনুশীলন শুরু করলো গোটা ইস্টবেঙ্গল দল। তারপর বল পায়ে হালকা অনুশীলন করে, দল শুরু করলো দুটি দলে ভাগ করে আক্রমণের অনুশীলন। যেখানে শুরু থেকেই দেখা গেলো পাসিং ফুটবলের উপরে বেশি জোর দিচ্ছেন কোচ অস্কার ব্রুজো। ডিফেন্স থেকে পাস খেলে উপর উঠে আক্রমণভাগের ফুটবলাররা কিভাবে গোল তুলে নেবেন, সেই অনুশীলনও হল এদিন। এছাড়াও দুই উইংকে যথেষ্ট সচল রাখতে দেখা যায় হেড কোচ অস্কার ব্রুজোকে।
অনুশীলনের শেষে ফুটবলাররা যখন বেরিয়ে যাচ্ছিলেন, সেই সময় ফুটবলারদের সঙ্গে একবার ছবি তোলার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেছিলেন লাল-হলুদ সমর্থকেরা। এমনকি অনুশীলনের শেষে দল যখন বাসে করে মাঠ ছাড়ছে, সেই সময় টিম বাসকে ঘিরে রংমশাল জ্বালিয়ে ফুটবলারদের চাঙ্গা করার একটি প্রক্রিয়া সারলেন লাল-হলুদের সমর্থকেরা। বলা ভালো মরশুমের শুরু থেকেই ইস্টবেঙ্গল সমর্থকেরা বুঝিয়ে দিলেন যে দলের পারফরম্যান্স যেমনই হোক না কেনো, প্রিয় দলকে সমর্থন করতে তারা কখনও পিছুপা হননা। এদিকে অনুশীলন শেষে মাঠ ছাড়ার সময় কোচ অস্কার ব্রুজো জানিয়ে গেলেন, “আগেরবারের তুলনায় এবারের দল খুব ভালো হয়েছে। আশা করব এই দল নিয়ে আমরা যথেষ্ট লড়াই করব”। এছাড়াও বিদেশী ফুটবলারদের খেলানোর বিষয়ে তিনি বলেন, “এখনো বেশ কয়েকজনের মেডিকেল টেস্ট বাকি রয়েছে। ফলে আমি এখনো জানিনা পরবর্তী ম্যাচে প্রথম একাদশে আমি কোন কোন বিদেশিদের পাব। তবুও একটা সেরা একাদশ তৈরি করার লক্ষ্যে রয়েছি”।