Connect with us

তরুণ প্রতিভাদের খোঁজে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন ইউথ চ্যাম্পস। বিস্তারিত পড়ুন…

রে স্পোর্টজ ওয়েব ডেস্ক: বৃষ্টিস্নাতো আবহাওয়ার মাঝেই, হঠাৎ রাজারহাটের ন্যাশনাল সেন্টার অফ এক্সিলেন্সের মাঠে বেশ কিছু তরুণ ফুটবলারদেরকে নিয়ে চলছে প্রশিক্ষণ। তবে হঠাৎ কিসের জন্য এই প্রশিক্ষণ? এই প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যটাই বা কি? মূলত যেকোনও দেশের ফুটবলের ভিত নির্ভর করে সেই দেশের তরুণ প্রতিভাদের উপরই। যেই কারণে ভারতীয় ফুটবলের উন্নতির স্বার্থে দীর্ঘদিন ধরেই তরুণ ফুটবলার তুলে আনার দিকে নজর দিয়েছে রিলায়েন্স। রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন ইউথ চ্যাম্পসের মাধ্যমে, বিগত ১০ বছর ধরে সেই কাজটি খুব দারুণভাবেই করে এসেছে রিলায়েন্স গ্রুপ। এর আগে পুনে, মুম্বাইয়ের মত শহরেও এরকম ক্যাম্প করা হয়েছে। এবার সেই মতোই কলকাতায় অনুষ্ঠিত হলো রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন ইউথ চ্যাম্পসের এই ক্যাম্পটি। এর আগে বিভিন্ন ফুটবলার এই ক্যাম্প থেকে উঠে এসেছেন এবং পরবর্তীতে জাতীয় দলের হয়েও প্রতিনিধিত্ব করছেন। ইতিমধ্যেই ভারতের অনূর্ধ্ব-২৩ দল তাজিকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলতে তাজিকিস্তান উড়ে গিয়েছে। উল্লেখ্য ভারতের সেই অনূর্ধ্ব-২৩ দলেও এই রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন ইউথ চ্যাম্পসের থেকে বেশ কয়েকজন ফুটবলার রয়েছেন। যেমন রয়েছেন মোহনবাগানের তরুণ গোলরক্ষক প্রিয়াংশ আর্য ঠিক তেমনি সেই দলে রয়েছেন বিগত মরশুম আইএসএলে জামশেদপুর এফসির জার্সি গায়ে দারুন পারফরম্যান্স করা সানান মহম্মদের মত ফুটবলার। এর আগে এই রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন ইউথ চ্যাম্পসের থেকেই উঠে এসেছেন তারা।

বুধবার ছোট্ট তরুণ প্রতিভাদের মাঝেই উপস্থিত ছিলেন সদ্য এই ক্যাম্প থেকে পাস করে বেরোনো চারজন ফুটবলার। ভারতীয় ফুটবলে ইতিমধ্যেই বড় ক্লাবে খেলার অভিজ্ঞতাও হয়ে গিয়েছে তাদের। যেখানে রয়েছেন শুভজিৎ বেলেল (মুম্বই সিটি এফসি), আকিব নবাব (চেন্নাইয়িন এফসি) সুপ্রতিম দাস (মুম্বই সিটি এফসি), রনিত সরকার (শিলং লাজং এফসি), কৌস্তব দত্ত (ইস্টবেঙ্গল) এবং প্রান্তিক সাহা (বেঙ্গালুরু এফসি) মত ফুটবলার। এদিনের ক্যাম্পে এসে শুধুমাত্র তরুণ ফুটবলারদের কে আগামী দিনে ফুটবলে ভালো পারফরম্যান্স করার বার্তাই দিলেন না তারা। বরং মাঠে নেমে তাদের সঙ্গে ফুটবল খেলে নিজেদের অভিজ্ঞতাও তাদের মধ্যে ছড়িয়ে দিলেন এই সকল ফুটবলাররা। একটা সময় এই ক্যাম্প থেকেই তাদেরও যাত্রা শুরু হয়েছিল। যার ফলে আগামী দিনে যেন এই ক্যাম্পে খেলেই ভারতীয় ফুটবলে নিজেদের পরিচয় তৈরি করতে পারেন এই তরুণ ফুটবলাররা, সেই কথাও কিন্তু জানিয়ে গেলেন রনিত সরকার, কৌস্তব দত্তরা। আধুনিক দিনের ফুটবলে ঠিক কোচেরা যেরকমভাবে ফুটবলার থেকে অনুশীলন করিয়ে থাকেন ঠিক সেই ভাবেই এদিন অনুশীলন করলেন সেই ১২-১৩ বছরের তরুণ ফুটবলাররা। অনুশীলনে প্রত্যেকের মধ্যেই একটা আলাদা উত্তেজনা দেখা যাচ্ছিল ফুটবলকে ঘিরে। প্রত্যেকটা বাচ্চার স্বপ্ন থাকে একদিন দেশের হয়ে খেলার। ঠিক সেই স্বপ্ন নিয়েই বেশ কিছু তরুণ ফুটবলাররা কিন্তু এদিন মাঠে নেমেছিল নিজেদের সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যেই।

শুধুমাত্র কলকাতার আশেপাশের থেকেই নয়, দূর দূরান্ত থেকেও বেশ কিছু তরুণ ফুটবলারদের কে তাদের পরিবারের সদস্যরা নিয়ে হাজির হয়েছিলেন এদিনের অনুশীলনে। কেউ মালদা আবার কেউ বর্ধমান, ফুটবল মানেই যে ভালোবাসা সেটা আরও একবার প্রমাণ করলেন এই তরুণ ফুটবলাররা। চোখে একরাশ স্বপ্ন নিয়ে তারাও এদিন উপস্থিত হয়েছিলেন এই ক্যাম্পে। তাদেরই মধ্যে একজন হলেন বিজয় দাস। ১২ বছরের এই তরুণ ফুটবলার এই মরশুম খেলেছেন মোহনবাগানের অনূর্ধ্ব ১৩ দলে। মাত্র দুটি ম্যাচে খেলার সুযোগ পেলেও, তার চোখে স্বপ্ন পরবর্তীতে মোহনবাগান সিনিয়র দলের পাশাপাশি জাতীয় দলের হয়েও ফুটবলটা খেলার। তবে এই যাত্রায় শুধুমাত্র একা লড়াই করছেন না বিজয় দাস। সেই লড়াইয়ে রয়েছেন তার বাবাও। কাকদ্বীপ থেকে রাজারহাটে ছেলেকে নিয়ে অনুশীলন করাতে ছুটে এসেছিলেন তিনি। কাকদ্বীপের রাস্তায় হকারী করেই সংসার চালান তিনি। তবুও নিজের ছেলের স্বপ্নকে কোনভাবেই পিছনে ফেলে দিতে রাজি নন তিনি। ছেলের পাশাপাশি বাবারও ঠিক একই স্বপ্ন যেন তার ছেলে একদিন একজন বড় ফুটবলার হতে পারেন। এর থেকেই বোঝা যায় যে ফুটবল আজও বেশ কিছু মানুষের বেঁচে থাকার একটা উপায়। এবং সেই উপায়কেই ভবিষ্যতে যেন এই তরুণ ফুটবলাররা নিজেদের মধ্যে তৈরি করে নিতে পারে এবং দেশের হয়ে খেলে নিজেদের নাম আরও বেশি উজ্জ্বল করতে পারে, সেইদিকেই নজর দিচ্ছে এই রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন ইউথ চ্যাম্পস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য খেলা